নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে দুই ভাই নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাদের বাবা-মা। সোমবার (৩১ মার্চ) রাত ৯টার দিকে উপজেলার ঘোড়াশালের ভাগদী গ্রামের কুড়ইতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি, দুই ভাইকে চোর সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে। তবে নিহতদের স্বজনদের অভিযোগ, চাঁদা না দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন- রাকিব (২৫) ও সাকিব (২০)। আহত হয়েছেন রাকিব ও সাকিবের বাবা আশরাফ উদ্দিন (৫০) ও মা রাবেয়া খাতুন (৪৫)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার সকালে ভাগদীর কুড়ইতলী এলাকায় অটোরিকশার ব্যাটারি চুরি করতে এসেছে সন্দেহে স্থানীয়রা হিমেল (২৩) নামে একজনকে মারধর করে। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এব্যাপারে বিকেলে রাকিব ও সাকিব ঘটনাস্থলে গিয়ে হিমেলের পক্ষে প্রতিবাদ জানান এবং একপর্যায়ে অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করে চলে আসে।
পরে সন্ধ্যায় আবারও তারা কুড়ইতলী এলাকায় গেলে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও অটোরিকশা চালকরা তাদের দুজনকে আটক করে মারধর করে। এ ঘটনা জানতে পেরে তাদের বাবা-মা দুই ছেলেকে উদ্ধার করতে সেখানে যান। তখন তাদেরও পিটিয়ে আহত করা হয়।
সাকিব ও রাকিবকে আহত অবস্থায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন এবং রাকিবকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ঢাকায় নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
রাকিব ও সাকিবের চাচি হাজেরা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘এলাকার কিছু সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে আমাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছিল। চাঁদা না দেওয়ায় তারা ঈদের দিন পরিকল্পিতভাবে রাকিব ও সাকিবকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।’
পলাশ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনির হোসেন বলেন, ‘চোর সন্দেহে একজনকে মারধর করা হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এর প্রতিশোধ নিতে গিয়ে সন্ধ্যায় গণপিটুনির মুখে পড়েন তারা। এঘটনায় দুই ভাই নিহত হন। তদন্ত চলছে, তবে এখনও চাঁদাবাজির অভিযোগের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তদন্ত চলছে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।