স্টাফ রিপোর্টার:
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে অপহরণের ৫ বছর পর পুলিশের তৎপরতায় বাবা-মায়ের কোলে ফিরেছেন ভানোর ইউনিয়নের সামাউন আলী নামে এক স্কুলছাত্র।
শুক্রবার গভীর রাতে তাকে বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তায় ছেড়ে যায় অপহরণকারীরা। সেখান থেকে পুলিশ ও স্বজনরা সামাউনকে উদ্ধার করে। শনিবার দুপুরে বিয়ষটি নিশ্চিত করেছেন বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি তদন্ত দিবাকর অধিকারী। উদ্ধার হওয়া স্কুলছাত্র সামাউন আলী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের গোগবস্তি গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে।
পুলিশ ও স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গেল ৫ বছর হলো চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ৫ বছর আগে নবম শ্রেণির ছাত্র সামাউন আলী (২০) কে ঢাকায় নিয়ে যান তারই চাচাতো ভাই জমিরুল ইসলাম ওরফে মিঠুন।
ঢাকা নিয়ে যাওয়ার কিছুদিন পর থেকে পরিবারের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় সামাউনের। এরপরে ভিকটিম সামাউনের বাবা একাধিকবার ছেলেকে ফেরত চান মিঠুনের কাছে। ছেলেকে ফেরত পাঠানোর কথা বলে সামাউনের বাবার কাছে কয়েক দফায় টাকাও নিয়েছেন মিঠুন। কিন্তু ছেলেকে ফেরত দেয়নি।
দীর্ঘদিন ধরে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ছেলেকে খোজ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে গেল ৭ মাস আগে ঠাকুরগাঁও আদালতে সামাউনের চাচা আব্দুল খালেক ও তার ছেলে জমিরুল ইসলাম ওরফে মিঠুনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বিজ্ঞ আদালত আমলে নিয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে রুজু করে স্কুলছাত্রকে উদ্ধারের নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দিবাকর অধিকারী জানান, আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর মামলাটি তদন্ত শুরু করি। পুলিশের তৎপরতা অপহরণকারীরা বুঝতে পেরে ছেলেটিকে বালিয়াডাঙ্গী চৌড়াস্তায় ছেড়ে পালিয়েছে। শনিবার বিকালে আমরা আইনী প্রক্রিয়া শেষে ছেলেটিকে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করবো। তাছাড়া ছেলেটিকে অসুস্থ মনে হচ্ছে। তার চিকিৎসার প্রয়োজন।
উদ্ধার হওয়া স্কুলছাত্র সামাউন আলী জানান, নরসিংদি জেলার কোন এক গুদামে নিয়ে তাকে রাখা হয়েছিল। কাজ করতো সে, বেতন তুলে নিতেন অন্য কেউ। কিছুদিন এভাবে চলার পর সবার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এরপরে কোথায় ছিলেন, কি করছিলেন, কিছুই বলতে পারছে না সে। তবে তাকে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে বলে দাবি করেন।
সামাউনের বাবা আব্দুস সোবহান বলেন, স্থানীয় ভাবে শালিস বসিয়ে একাধিকবার ছেলেকে ফেরতে চেয়েছি। মামলার আসামীরা কোন কথা শুনেনি। গ্রামবাসীর পরামর্শে মামলা করার পর পুলিশ যখন আসামীদের ধরতে চাইল, তখন তারা ছেলেকে ফেরত দিলো। ছেলেকে ফেরত পেয়ে পুলিশকে ধন্যবাদ দেন তিনি।
এদিকে স্কুলছাত্র ফিরে আসার খবরে সামাউনকে একনজর দেখতে বালিয়াডাঙ্গী থানায় এসে ভীড় করেন গ্রামবাসী।