পঞ্চগড়ে ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে মাদ্রাসার শিক্ষক গ্রেফতার 

মোঃ জয়নাল আবেদীন, স্টাফ রিপোর্টারঃ

ওই শিক্ষার্থীকে কোরআন শরীফের উপর হাত দিয়ে কাউকে না জানাতে  শপথ করায়

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় ১১ বছরের এক আবাসিক মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রকে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে রেজওয়ান পারভেজ (২২) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে। পরে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

জানা গেছে, রোববার (১৬ মার্চ) পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের টোকরাভাষা মোশাররফ নগর এলাকার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মার্কাজুল উলূম মাদরাসা লিল্লাহ বোডিং ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে।

সোমবার (১৭ মার্চ) মধ্যরাতে স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে তাকে আটক করে থানা পুলিশকে খবর দেয়। এর পর মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ভোর সকালে ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে।

গ্রেপ্তার রেজওয়ান পারভেজ ওই মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষক। রেজওয়ান বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বগদুলঝুলা সর্দারপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য দিনের মতো গত ১৬ মার্চ রাতে ওই শিক্ষার্থী ঘুমিয়ে পড়ে। এর মাঝে মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষক রেজওয়ান পারভেজ তাকে জরুরী প্রয়োজনে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে যায়। এর পর ভয়ভীতি দেখিয়ে ও হুঁমকি দিয়ে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক বলাৎকার করে। এর পর বিষয়টি কাউকে না জানাতে ওই শিক্ষার্থীকে কোরআন শরীফের উপর হাত দিয়ে শপথ করান শিক্ষক।

সোমবার (১৭ মার্চ) রাতে মাদ্রাসার মসজিদের তারাবির নামাজের পর এক প্রতিবেশীকে দেখতে পেয়ে সব ঘটনা খুলে বলে ওই ছাত্র। পরে ওই প্রতিবেশী তার বাবাকে জানানোর পাশাপাশি ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে। পরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা মাদ্রাসায় উপস্থিত হলে স্থানীয়রা থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষক রেজওয়ানকে গ্রেপ্তার করে।

এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, ‘খবর পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে রাতেই থানায় নেয়া হয়। ধর্ষণের অভিযোগে মঙ্গলবার ভোর সকালে ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের পর আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর শারীরিক পরীক্ষার জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

এদিকে আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মার্কাজুল উলূম মাদরাসা লিল্লাহ বোডিং ও এতিমখানার মুহতামিম নুর নবী  বলেন, ‘রাতে মাদ্রাসায় স্থানীয়দের অবস্থান দেখে জানার চেষ্টা করা হলে তারা বিষয়টি না জানিয়ে আমাদের সেখান থেকে বের করে দেয়। একপর্যায়ে লোকজন ঘটনাটি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে অবগত না করেই অভিযোগ তুলেছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *