মুসলিম খান
সম্পাদক, এমএসটিভি ইউকে
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, তারা নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, বিশেষত ভোটাধিকারসহ অন্যান্য নাগরিক অধিকার আদায়ে অবহেলিত রয়ে গেছেন। এখন সময় এসেছে, প্রবাসীদের স্বার্থ সংরক্ষণে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল বা আন্দোলনের উত্থানের।
প্রবাসীদের সমস্যা ও বঞ্চনার চিত্র
প্রবাসীরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। বিমানবন্দরে দুর্ব্যবহার, কনস্যুলার সেবায় অনিয়ম, বৈধ উপায়ে দেশে বিনিয়োগ করতে গিয়ে জটিলতার সম্মুখীন হওয়া—এসব যেন নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও, প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিজেদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, যা তাদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
প্রবাসীদের ভোটাধিকার ও রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব
বর্তমানে বাংলাদেশে বসবাসরত নাগরিকরাই কেবল নির্বাচনে সরাসরি ভোট দিতে পারেন, যা প্রবাসীদের প্রতি চরম বৈষম্যমূলক। অনেক দেশেই প্রবাসীদের ডাকযোগে বা অনলাইনে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ রয়েছে, যা বাংলাদেশেও চালু করা সম্ভব। শুধু তাই নয়, সংসদে প্রবাসীদের জন্য সংরক্ষিত আসন থাকা প্রয়োজন, যাতে তাদের কণ্ঠস্বর নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।
একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তির প্রয়োজনীয়তা
প্রবাসীদের স্বার্থ সংরক্ষণে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই এখন সময় এসেছে, প্রবাসীদের অধিকার রক্ষায় একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের। একটি দল, যা প্রবাসীদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করবে, তাদের সমস্যা নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে সোচ্চার থাকবে এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
আমাদের করণীয়
প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা, সংসদে তাদের প্রতিনিধি রাখার দাবী উত্থাপন করা এবং তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রবাসী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করা জরুরি। পাশাপাশি, একটি সুসংগঠিত রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলে প্রবাসীদের স্বার্থ সংরক্ষণের পথ সুগম করতে হবে।
বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে প্রবাসীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই তাদের প্রতি অবহেলা করা মানে দেশের ভবিষ্যৎকে দুর্বল করা। এখন সময় এসেছে, প্রবাসীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠিত আন্দোলন গড়ে তোলার।