চট্টগ্রামে নিজের মেয়েশিশুকে বারবার ধর্ষণ, মায়ের কৌশলে ধরা পড়ল ধর্ষক বাবা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চট্টগ্রামে নিজের ১০ বছর বয়সী শিশু কন্যাকে নিয়মিত ধর্ষণ করে আসছিলেন আপন বাবা। এমন ঘটনা শিশুটি মাকেও বিশ্বাস করাতে পারছিল না। শেষমেশ মায়ের পরামর্শেই ধর্ষণের ঘটনা মোবাইলে ধারণ করানোর পর পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে নরপিশাচ ধর্ষক বাবা।

রোববার (৯ মার্চ) চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী এলাকার বলুয়ারদিঘির পাড় এলাকায় বেলা ০৩ টার দিকে এমন ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় ঐদিন রাতে ধর্ষকের স্ত্রী শিশুটির মা নিজে বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন মামলা নম্বর (২১) । ধর্ষণের শিকার কন্যাশিশুটি রাত দুইটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার শিশুটির মা একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন। অন্যদিকে বাবা প্রদীপ বণিক চকবাজার মতি টাওয়ারে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন। তিনি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার লোক হলেও দীর্ঘদিন ধরে সপরিবারে চট্টগ্রামে বসবাস করছেন।

জানা গেছে, প্রতিদিন শিশুটির মা যখন গার্মেন্টসের কাজে বেরিয়ে যান, বাবা তখন নাইটগার্ডের চাকরি শেষে বাসায় ফেরেন। এ সুযোগে বেশ অনেকদিন ধরে নিজের কন্যাশিশুটির সঙ্গে অনৈতিকভাবে মেলামেশার চেষ্টা করে আসছিলেন বাবা নরপিশাচ প্রদীপ বণিক। এর আগে যতোবারই এমন ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, শিশুটি তার মা বাসায় ফেরার পর মাকে বুঝানোর চেষ্টা করেছে। মায়ের কাছে কাঁন্নাকাটিও করতো শিশুটি। কিন্তু পুরো বিষয়টি অবিশ্বাস্য মনে হতো মায়ের কাছেও।

কয়েকদিন আগেও শিশুটিকে যখন বাবা প্রদীপ বণিক ধর্ষণ করে, তখন সারাক্ষণই কাঁন্নাকাটি করতে থাকে মেয়েটি। একপর্যায়ে মাকে সবকিছু খুলে বলে শিশুটি। তখন মা তাকে একটি মোবাইল হাতে দিয়ে বলেন, যখনই বাবা ওরকম কিছু করার চেষ্টা করবে, তখন মোবাইলে ভিডিও করে রাখবে।

রোববার (৯ মার্চ) বেলা ৩টার দিকে প্রদীপ বণিক রোজকারমতো মেয়েকে বিছানায় টানার চেষ্টা করলে সে কৌশলে মোবাইলের ভিডিও সচল করে দেয়। গার্মেন্টসের কাজ শেষে বাসায় ফেরার পর সেই ভিডিও দেখে মা ও মেয়ে দুজনেই চিৎকার করে কাঁন্নাকাটি করতে থাকে। এ সময় আশেপাশে তাদের কয়েকজন নিকটাত্মীয়ও সেখানে এসে পৌঁছায়।

এরপর বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে জাতীয় জরুরি সহায়তা সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে ঘটনা জানানো হলে, চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানা থেকে পুলিশ এসে প্রদীপ বণিককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। অন্যদিকে ভিকটিম শিশুটিকে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করানো হয়।
রাত একটার দিকে এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটির বাদি ধর্ষকের স্ত্রী শিশুটির মা নিজে।

রাতে কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ঘটনায় মেয়েটির মা নিজে বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ এ ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *