মানবসেবার আড়ালে প্রতারণার দায়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ

ডেস্ক নিউজঃ

আজ বুধবার ১ মে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকার মিরপুর থেকে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশের একটি টিম। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ডিবি পুলিশের প্রধান হারুন অর রশীদ জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পরিচিত মুখ মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে মানবতার ফেরিওয়ালার মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর সব প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।

এমনকি অসহায় মানুষের নামে সংগ্রহ করা অর্থ আত্মসাৎ এবং তাদের কিডনিসহ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চুরির মতো গা শিউরে ওঠা অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

সম্প্রতি মিল্টন সমাদ্দারের বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। একে একে মুখ খুলতে থাকেন ভুক্তভোগীরা।

যদিও কয়েকটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে মিল্টন সমাদ্দার নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিল্টন সমাদ্দারের সেবামূলক কর্মকাণ্ডের রয়েছে ব্যাপক প্রচারণা।

অসহায়-দুস্থ মানুষের সেবায় তিনি গড়ে তুলেছেন ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামে একটি বৃদ্ধাশ্রম। রাস্তা থেকে অসুস্থ ও ভবঘুরেদের কুড়িয়ে ওই বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় দেন, সেবা-শুশ্রূষাও করেন। সেসব নারী, পুরুষ ও শিশুকে নিয়ে ভিডিও তৈরি করে প্রায়ই তাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করতে দেখা গেছে ।মানুষের অসহায়ত্ব তুলে ধরে তাদের জন্য বিত্তবানদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন সমাদ্দার।

তার আবেদনে সাড়া দিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ১৬টির বেশি নম্বর এবং তিনটি ব্যাংক হিসাবে প্রতি মাসে জমা হয় প্রায় কোটি টাকা। এর বাইরে অনেকেই সরাসরি অনুদান দিয়ে আসেন তার প্রতিষ্ঠানে। মানবিক কাজের জন্য এখন পর্যন্ত তিনটি রাষ্ট্রীয় পুরস্কারও পেয়েছেন মিল্টন সমাদ্দার।

মানবিকতার আড়ালে ভয়াবহ প্রতারণার জাল বিস্তার করেছেন মিল্টন সমাদ্দার। প্রকৃতপক্ষে তিনি যে কয়জনকে লালন-পালন করছেন, প্রচার করছেন তার চেয়ে কয়েক গুণ। লাশ দাফন করার যে হিসাব দিচ্ছেন, তাতেও আছে বিরাট গরমিল। সবচেয়ে ভয়ংকর, মিল্টনের বিরুদ্ধে রয়েছে অসহায় মানুষকে আশ্রয় দেয়ার নামে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির অভিযোগ।

মিল্টন সমাদ্দারের ব্যক্তি জীবনেও নৈতিকতা বা মানবিকতার কোন বালাই নেই। কিশোর বয়স থেকেই ছিলেন অর্থলোভী। প্রতিবেশী, চিকিৎসক কিংবা সাংবাদিকরা বিভিন্ন সময় তার কাছে শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন। এমনকি নিজের জন্মদাতা বাবাকেও বেধড়ক মারধরের অভিযোগ রয়েছে মিল্টন সমাদ্দার বিরুদ্ধে।#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *